অকালবোধনে দুর্গাপূজা
কলমে : শুভেচ্ছা দত্ত
যা কিছু আমাদের উৎসব, তা, ধারক পুরাণ বই কিছু নয়। দেবী আদিশক্তি বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্নরূপে আবির্ভূত হয়েছেন। আমাদের ‘অকালবোধন’ পুজোর পিছনেও রয়েছে পুরাণেরই কৃতিত্ব। মায়ের পূজার পুরনো তিথি হল বসন্তকাল, তাই তার আরেক নাম দেবী বাসন্তী।
রামচন্দ্র দেবী সীতাকে উদ্ধার হেতু যুদ্ধ শুরু করলেও রাবণকে পরাস্ত করতে বারবার অক্ষম হচ্ছিলেন। তখন আদিদেব ব্রহ্মা, মুনির বেশে এসে রামচন্দ্রকে দেবী মহামায়ার আরাধনার পরামর্শ দেন। সময়টা ছিল শরৎকাল আর দেবীর পূজার জন্য একবছর অপেক্ষার কোনো অবকাল ছিল না। রামচন্দ্র তখন মহামায়ার অকালবোধন পুজো শুরু করেন। পুজোর জন্য হনুমান জোগাড় করে আনে একশত আটটা নীলপদ্ম। পুজোর সময় শেষ মন্ত্রপাঠ করতে গিয়ে রামচন্দ্র দেখেন একটি নীলপদ্ম কম। ছদ্মবেশী ব্রহ্মা রামচন্দ্রকে জানান যে পুজো সম্পূর্ণ না হলে দেবী সীতাকে উদ্ধার করা অসম্ভব হবে। উপয়ান্তর না দেখে রামচন্দ্র তার ডান কমললোচন মাকে সমর্পণ করার সংকল্প করেন। সেই মুহুর্তে মহামায়া আবির্ভূতা হয়ে রামচন্দ্রকে বিরত করেন এবং তাকে জয়লাভের আশীর্বাদ দেন। এর থেকেই ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে দশেরা পালন হয় এবং বাংলায় হয় অকালবোধন দুর্গাপুজো।
বাংলায় মহিষাসূরমর্দিনী রূপে পূজিতা দেবী, সপরিবারে দেবী উমা রূপে পূজিতা হন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে। তিনিই একচালে দেবীর পূজা শুরু করেন বনপুকুরিয়া নামের একটি গ্রামে যা পরবর্তীকালে ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলায়।

মাতৃরূপে – Khusbu Solanki
দৃশ্য গ্রাহক – Soumya Halder
পোশাক ও অলংকার – Mridula Das Majumder
ভাবনা – Mridula Das Majumdar