Trivia

কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ

কলমে : লহমা ব্যানার্জ্জী

সপ্তদশ শতকের এক উচ্চস্তরের তন্ত্রসাধক ছিলেন কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ।তিনি ১৬০০-‘১০খ্রি: নদিয়া জেলার নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন।কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ ছিলেন উদারচেতা, ধর্মবিষয়ে  ছিল না  কোনো গোড়ামি। তাই তন্ত্রসার গ্রন্থে শৈব, গণপত্য, শাক্ত, বৈষ্ণব ও সৌর সম্প্রদায়ের তন্ত্রগ্রন্থগুলির সার গ্রহণ করে সন্নিবেশন হয়েছে।তাঁর প্রকৃত নাম কৃষ্ণানন্দ ভট্টাচার্য । তন্ত্র সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে তিনি ‘আগমবাগীশ’ উপাধি পান।তন্ত্রশাস্ত্রে সুপণ্ডিত এই তন্ত্রসাধক ১৭০ টি গ্রন্থ থেকে নির্যাস গ্রহণ করে বিখ্যাত “তন্ত্রসার” গ্রন্থটি রচনা করেন এবং সমগ্র দেশে এই গ্রন্থটি খ্যাতনামা হয়।

তিনি তাঁর সাধনলব্ধ ঐশরীয় শক্তি দ্বারা দৈবাদেশ পান এবং সেই মতো তিনি মা কালীর শান্ত রূপ কল্পনা করেন যে রূপ দক্ষিণাকালী নাম খ্যাত। ভক্তিনম্র হৃদয়ে প্রাণের আকুতি নিয়ে সহজ সরল পদ্ধতিতে মায়ের সেই মঙ্গলময়ীরূপী বিগ্রহ তৈরি করে তিনিই বাংলার ঘরে ঘরে মা কালীর পূজার প্রচলন করেন।এবং তিনি ধীরে ধীরে বাংলার কালী সাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ নামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।তন্ত্রাধক কৃষ্ণানন্দ দীপান্বিতা অমাবস্যার দিনে ছোট আকারের কালীমূর্তি নির্মাণ করে রাত্রে পূজার্চনা শেষে ভোরে বিসর্জন দিতেন। এই কারণে লোকে বলতো “আগমবাগীশি কাণ্ড”। পরবর্তীতে তাঁর পূজিত দেবী “আগমেশ্বরী মাতা” নামে প্রতি বছর তার জন্মস্থান অর্থাৎ নবদ্বীপে পূজিত হন।লোকমুখে শুনে মনে করা হয় তিনি বীরভূমের মল্লারপুর গ্রামে ধ্যানমগ্ন হয়ে তাঁর দেহত্যাগ করেন।